No Man's Sky - Game Review

Last updated on: August 14, 2016

প্রায় কয়েক কোটি বছর অপেক্ষার পর হাতে পেলাম No Man’s Sky গেমটি। Hello Games নামের এক প্রতিষ্ঠানের তৈরী গেম এটি। এমন এক্সপ্লোরেশন, কাহিনী আমার বরাবরই ভালো লাগে। গেম পাবলিশ হবার আগেই গেমটা নিয়ে মানুষের আগ্রহ উন্মাদনার পর্যায়ে চলে গিয়েছিল।

অচিন গ্রহের অচিন চাঁদ, তার পানে চেয়ে অচিন নুশমিয়াস!

অচিন গ্রহের অচিন চাঁদ, তার পানে চেয়ে অচিন নুশমিয়াস!

কারণ আগেই জানা গিয়েছিল:

  • প্রায় ১৮ কুইন্টিলিয়ন (1.8×1019) গ্রহ আছে এটিতে।
  • প্রতিটি গ্রহের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য - জীব জন্তু, গাছপালা, পরিবেশ - এগুলোর ভিত্তিতে
  • গেমের সবকিছু প্রসিডিউরালি জেনারেটেড!!
  • জিরো লোডিং টাইম অলমোস্ট - গ্রহের বাইরে থেকে গ্রহের ভিতরে ঢুকতে কোন সময়ই লাগে না লোডিংয়ে। চোখের সামনেই দেখা যায় আস্তে আস্তে গ্রহ বড় হচ্ছে, তার পরে পাহাড় নদী, প্রাণী দেখা যায়।
  • অন্য কোন প্রাচীন এলিয়েন সভ্যতার নিদর্শন আশে পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে - কিন্তু কেন সে বিষয়ে গেম খেলে জানা লাগবে

সব মিলিয়ে সবার মাথা খারাপ করা অবস্থা গেম রিলিজ হবার আগেই! আর আমার তো আরো বেশি। ফ্রিল্যান্সার গেমের মতো আর এমন পাইও নি। সব মিলিয়ে পাগল অবস্থা!

স্পেসশিপে যাই মনচেরস্কাইভে ঘুরতে

স্পেসশিপে যাই মনচেরস্কাইভে ঘুরতে

রিভিউ লেখার আগে কিছু জিনিষ পরিষ্কার করা দরকার। No Man’s Sky যা যা না:

  • মাল্টিপ্লেয়ার গেম
  • শুটিং
  • ফ্লাইট সিমুলেশন
  • সারভাইভাল
  • ট্রেডিং

যদিও উপরের সবগুলোই গেমটায় আছে, কিন্তু গেমের মূল উদ্দেশ্য সেটা না। মূল উদ্দেশ্য এক্সপ্লোর করা। বিশাল এই কৃত্রিম জগতের মাঝে এসে পৌঁছানো।

এই বিশাল ইউনিভার্স তারা যে তৈরী করেছে সেখানে ঘুরে ফিরে বেড়ানো, দেখা যদি গেমের উদ্দেশ্য হয়, যদি উদ্দেশ্য হয় প্রাচীন এলিয়েন সভ্যতার সম্পর্কে জানা, তাদের ভাষা শেখা, তাদের সংষ্কৃতি বুঝা - তাহলে গেমটা বাড়াবাড়ি রকমের সফল। কারণ গেমের ফ্লাইট, শুটিং তেমন সুবিধার কন্ট্রোল না, গেমটায় সারভাইভাল কোন ভাবেই কঠিন না, ট্রেডিংও করা যায় মনমতো।

ভালো দিক

গেমের ভিতরে তারা যে বৈচিত্র্য এনেছে - তা অসাধারণ। আমি প্রায় ১০ ঘন্টার উপরে খেলেছি, এখনো কোথাও একই রকমের গ্রহ পাইনি। কোন গ্রহে এসিড বৃষ্টি হয় তো কোন গ্রহে প্রচন্ড দাবদাহ। এক গ্রহে প্রচুর গাছপালা ত‌ো আরেক গ্রহে আকাশে উড়ে বেড়ানো হাঙ্গরের মতো দেখতে পাখি! এই গ্রহে কিউট দেখতে ভালুক এসে কামড় দেয় তো ঐ গ্রহে দাঁত কটমটানো ডাইনোসর ঘাষ খায়, কাছে এসে খাবার খায়।

উড়ছে দেখো হাঙ্গর পাখি, বিদেশি এক আকাশ ছুঁই

উড়ছে দেখো হাঙ্গর পাখি, বিদেশি এক আকাশ ছুঁই

এ যেন সুকুমার রায়ের হেসোরাম হুঁশিয়ারের ডায়েরির এক বিচিত্র অনন্য রূপ চোখের সামনে। সেকেন্ডে সেকেন্ডের স্ক্রিনশটের প্রতিটা ওয়ালপেপার হবার মতো। মিউজিক? পরিবেশের সাথে মানানসই। এলিয়েনের গল্প? তিনটা প্রাচীন সভ্যতার খোঁজ পাওয়া গেছে এখন পর্যন্ত, Gek, Vay’Heek আর Korvux। তিনটাই তিনরকম, বিচিত্র দেখতে, বিচিত্র তাদের গল্প।

গেকের বকরবকর

গেকের বকরবকর

শেষ কথা

গেমটা সবার জন্য না। ফেবুর যুগে মানুষের ধৈর্য বড্ড বেশিই কম। সবকিছু চাই এখনই, এখনই, এখনইইই! সেখানে একটা গেম, ঘন্টার পর ঘন্টা খেলা লাগবে ধৈর্য ধরে। এলিয়েনের সভ্যতা নিয়ে জানা না জানা নিজের ব্যাপার। গেমের গ্রাফিক্স অসাধারণ, কিন্তু কন্ট্রোল বা ইউআই তত ভালো না। পিসি ভার্সনে নাকি বেশ কিছু বাগ আছে, আমার এখনো তেমন কোন সমস্যা হয়নি, টানা কয়েকঘন্টা খেলেও। যাদের ঘন্টার পর ঘন্টা স্পেসশিপে ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগে, বিচিত্র গ্রহ দেখতে ভালো লাগে, জানতে ইচ্ছা করে এলিয়েন সভ্যতার ব্যাপারে, বা ইচ্ছা করে বিচিত্র সব বহিঃজাগতিক প্রাণী দেখতে - এই গেম তাদের জন্যই!

Rating

4.5 / 5.0

Written on August 14, 2016